ফুল বেচেই কোটিপতি 'কাশ্মীর কি কলি' নুসরত

ফুল বেচেই কোটিপতি 'কাশ্মীর কি কলি' নুসরত

Wednesday October 26, 2016,

2 min Read

শুরুতে পাশে কেউ ছিল না। ছিল না কোনও ধরনের সহযোগিতা। বরং লোকে নিরাশ করেছিল। তাতে দমে‌ননি ৩৮ বছরের তরুণী নুসরত জাহান। আর তাঁর এই অদম্য মনোভাবই শেষপর্যন্ত তাঁকে উপহার দিয়েছে সাফল্য। কাশ্মীরের বাসিন্দা নুসরত এখন একজন সফল মহিলা উদ্যোগী। ফুলই তাঁকে এনে দিয়েছে সাফল্য।

image


কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার দাদোরা গ্রামের মেয়ে নুসরত। শিক্ষাগত যোগ্যতা কম্পিউটারে স্নাতক। সরকারি চাকরি করতেন। কিন্তু নিজে কিছু করবার তাড়নায় ২০১০ সালে সরকারি চাকরিটা ছেড়ে দেন। শুরু করেন ফুলের ব্যবসা। প্রথমে পৈতৃক বাসভবনের পিছনের জমিতে ফুল ফোটানো শুরু করেন। তাঁর হাতে ফোটানো ফুল ধীরে ধীরে বাজার পেতে থাকে।

এরপরের ঘটনা নুসরতের জীবনের গতিপথ পাল্টে দিয়েছে। বছরে কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা করছেন। মোটামুটিভাবে টার্নওভার দুকোটির আশেপাশে। তাছাড়া, নুসরতের সংস্থার মাধ্যমে কর্মসংস্থান হয়েছে জনা কু়ড়ি তরুণ-তরুণীর।

তবে শুরুটা ছিল দাঁতে দাঁত চিপে জীবনের কঠিন সময়ের অভিজ্ঞতা সহ্য করে যাওয়া। সেই কঠিন সময়ের কথা বলতে গিয়ে নুসরত বললেন, প্রথমে কারও কোনও সমর্থন পাইনি। পুঁজি বলতে যা ছিল তা নিজের জমানো কিছু টাকা। বিনিয়োগের জন্য এর-তার দরজায় হাত পেতেছিলাম। কিন্তু সকলেই প্রায় নিরাশ করেছিলেন।

নুসরতের লড়াইটা আসলে ডাক শুনে কেউ না এলে একলা চলোর লড়াই। নুসরত বলেন, মেয়েরা বিউটি পার্লার বা বুটিক চালাবে প্রচলিত ধারনা এটাই। ফ্লোরিকালচার নিয়ে মেয়েদের মাথা ঘামানোটা উপত্যকায় এখনও গতের বাইরে থাকার মতো বিষয়। ফলত আমিও গোড়ার দিকে কোনও মদত পাইনি। বাধ্য হয়ে একলাই চলতে হয়েছে। নুসরতের আক্ষেপ, সরকারি দফতর থেকেও কোনও সহায়তা পাইনি সেদিন।

অথচ, গোটা উপত্যকায় ফুলের প্রচুর চাহিদা। নুসরত এটা জানতেন। এই তথ্যটুকু সম্বল করেই ব্যবসায় নেমেছিলেন তিনি। তবে নুসরত কিন্তু গোড়া থেকেই জানতেন একদিন না একদিন তিনি জিতবেনই। কার্যত হয়েছেও তাই। নুসরত বলেন, ব্যবসা যে গতিতে চলছে তাতে আর পিছন ফিরে তাকানোর অবকাশ নেই।

এখন নুসরতের সঙ্গে যাঁরা ব্যবসা করছেন তাঁরা স্থানীয় ব্যাঙ্ক থেকে ক্ষুদ্র ঋণ পাচ্ছেন। আর নুসরত দিব্যি সফলভাবে চালাচ্ছেন একটি ফুলের দোকান। সেইসঙ্গে তিনটি ফ্লাওয়ার ফার্ম।

ফুলের ব্যবসা কিছুটা দাঁড়ানোর পরেপরেই নুসরত হিমালয়ান অ্যাগ্রো নামে একটি সংস্থা খুলেছেন। এই সংস্থা পার্সোনাল কেয়ার ও হোম কেয়ারের নির্ভরযোগ্য এক ব্র্যান্ড। হিমালয়ান অ্যাগ্রোর কর্মীদের বেশিরভাগই মহিলা। নিজে একজন মেয়ে বলেই মেয়েদের জন্যে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা নুসরতের অন্য।তম লক্ষ্য।

নুসরতের হাতে গড়া সংস্থার প্রোডাক্ট একাধিক। তার ভিতর রয়েছে জ্যাম, সাবান ইত্যাদিও। যে সমস্ত উপকরণ ব্যবহার করে এগুলি তৈরি করা হচ্ছে, তা স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ক্রয় করছেন নুসরত। এছাড়া হিমালয়ান অ্যাগ্রো ব্যানারে তৈরি করা হচ্ছে নানা ধরনের আয়ুর্বেদিক প্রোডাক্টও।