সাউথ ইন্ডিয়ান সিল্ক, কাঞ্জিভরম, বেনারসি। নামেই পরিচয় শাড়ির। ঠিক তেমনই বেরহামপুরী পাট্টা। ওড়িশার সিল্ক সিটি বলে পরিচিত বেরহামপুরের সেই বিখ্যাত বুননের শাড়ি এবার মিলবে অনলাইনে। এ কথা জানিয়েছেন বেরহামপুরের সাব-কালেক্টর এন পি কল্যাণ। গত ৬ অগাস্ট ছিল ন্যাশনাল হ্যান্ডলুম ডে। সেদিন একটি অনুষ্ঠানে তাঁতিদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তিনি। সরকারি আধিকারিককে হাতের কাছে পেয়ে নিজেদের অভাব অভিযোগের কথা জানান তাঁতিরা। তখনই তাঁরা জানান, বেরহামপুরী পাট্টা এত বিখ্যাত হলেও বিক্রি করতে তাঁরা নানা অসুবিধার সম্মুখীন হন। প্রচারও কম। এ কথা শুনেই একটি ওয়েবসাইট তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যার মাধ্যমে বিশ্বের কাছে তুলে ধরা যাবে বেরহামপুরী শাড়ির জাত।
এখনও যারা সাবেকি প্রথায় তাঁত চালিয়ে থাকেন সেই কারিগরদের রাজ্যভিত্তিক সংগঠন All Odisha Devanga Mahasangha. দেবাঙ্গ মহাসংঘের প্রেসিডেন্ট টি গোপী আশাবাদী যে ওয়েবসাইট শুরুর ফলে এই শাড়ির বিপণনে সাড়া মিলবে। একইরকম আশাবাদী তাঁতশিল্পীরা। তাঁদের আশা-www.weavercoop.com - এই ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে তাঁরা তাঁদের শিল্পকর্ম একদিকে যেমন বিশ্বের সামনে মেলে ধরতে পারবেন, অন্যদিকে বিক্রিও বাড়বে।
এক বিশেষ ওড়িশি পদ্ধতিতে বোনা হয় বেরহামপুরী পাট্টা। যা ফোড়া কুম্ভা (phoda kumbha) নামেই পরিচিত। একজন তাঁতশিল্পী জানালেন, এই শাড়ির ইতিহাস দুশো বছরেরও বেশি। সেই সময় থেকেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে এই শাড়ি রফতানি হোত। এমনকী পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে ভগবানকেও এই বস্ত্রে সাজানো হত।
শাড়ি এবং 'জোড়া' (পুরুষদের জন্য পা্ট্টা)-কেন্দ্রীয় সরকার থেকে Geographical Indication (GI)-এর স্বীকৃতি পেয়েছে। কোনও একটি বিশেষ ভৌগোলিক এলাকায় তৈরি, বিশেষ কোয়ালিটি ও সুনামের অধিকারী এমন জিনিসকে Geographical Indication দেওয়া হয়ে থাকে। এই ট্যাগ থাকলে জিনিসের কোয়ালিটি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। বলা যায় নকলের বিরুদ্ধে আইনি রক্ষাকবচ।
বেরহামপুরী পাট্টার বেশিরভাগটাই বিক্রি হয়ে থাকে সমবায় সমিতি ও বয়নিকার মাধ্যমে। বেরহামপুরে রয়েছে তিনটি তাঁত সমবায় সমিতি।বছরে যেখানে দেড় থেকে দু-কোটি টাকার জিনিস বিক্রি হয়। বেরহামপুর সিল্ক ওয়েভার্স সোসাইটির সেক্রেটারি কে আপ্পা রাওয়ের আশা, এবার অনলাইনেও তাঁরা দেশবিদেশ থেকে অর্ডার পাবেন।
(পিটিআই )