তরুণ উদ্যোগপতিদের সাহায্যার্থে বেঙ্গল চেম্বারে তৈরি হল বিশেষ সেল

তরুণ উদ্যোগপতিদের সাহায্যার্থে বেঙ্গল চেম্বারে তৈরি হল বিশেষ সেল

Tuesday September 27, 2016,

3 min Read

সম্প্রতি বেঙ্গল চেম্বারে হয়ে গেল প্রথম ই বিজনেস সামিট। বেঙ্গল চেম্বার শুরু করল তাদের নবতম উদ্যোগ। উদ্যোগপতিদের অনুপ্রাণিত করার প্রয়াস। তৈরি হয়েছে আলাদা করে একটি সেল। যেই সেল উদ্যোগপতিদের ইনকিউবেট করবে, মেন্টর হবে, বিভিন্ন শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ছোটো ও মাঝারি মাপের উদ্যোগপতিদের এগিয়ে যাওয়ার সুলুক দেবে দেশের এই প্রাচীনতম চেম্বার।

বেঙ্গল চেম্বারের বিজনেস সামিটে বক্তব্য রাখছেন জে আই এস গ্রুপের ডিরেক্টর সিমারপিত সিং

বেঙ্গল চেম্বারের বিজনেস সামিটে বক্তব্য রাখছেন জে আই এস গ্রুপের ডিরেক্টর সিমারপিত সিং


শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, গবেষণা এবং সংস্থা তৈরির সুলুক পাওয়া যাবে। আর নবীন প্রজন্মের চাহিদামত সেই প্রশিক্ষণ আসবে সেরা এবং সবথেকে দক্ষ বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকেই। এই উদ্যোগের প্রথম অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন জে আই এস গ্রুপের ডিরেক্টর এবং প্রখ্যাত শিল্পপতি তরণজিত সিংয়ের পুত্র সিমারপিত সিং। বেঙ্গালুরু থেকে এসেছিলেন কর্ণাটকের ইলেক্ট্রনিক্স ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজকুমার শ্রীবাস্তব। টেকনো ইন্ডিয়া বাটানগরের ডিরেক্টর আর এন লাহিড়ী। রাশিয়ান এক্সপোর্ট সেন্টারের ই-কমার্স শাখার প্রধান দিমিত্রি মাকিভ। এছাড়াও ছিলেন ভারত সরকারের এম এস এমই ডেভেলপমেন্ট ইন্সটিটিউটের ডেপুটি ডিরেক্টর দেবব্রত মিত্র।

সিমারপিত সিংয়ের মতে বাংলায় স্টার্টআপ সংস্থাগুলির বিকাশের গতি বেঙ্গালুরু কিংবা অন্য শহরে তুলনায় কম। এখানে মেন্টরশিপের কিংবা ইনকিউবেশনেরও অভাব আছে। সেই অভাব দূর করা জরুরি। তাঁর কাছে আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপ মানে একটা উদ্যোগ সম্পূর্ণভাবে গড়ে তোলা। তা সে শুরু করার আগে তার পরিকল্পনা ছকে ফেলা থেকে শুরু করে রিস্ক নেওয়া পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়াটাই উদ্যোগপতির কাছে চ্যালেঞ্জ। স্টার্টআপ সংস্থাগুলির উদ্যোগপতিদের এই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার তাগিদটাই ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যায় এবং সাফল্য এনে দেয়। ফলে রিস্ক নেওয়ার মানসিকতাই উদ্যোগপতিকে নির্মাণ করে।

তরুণ উদ্যোগপতি সিমারপিত সিংয়ের কথার রেশ ধরেই রাজকুমার শ্রীবাস্তব বলেন উদ্যোগের মানসিকতা ভীষণ জরুরি। কর্ণাটকে সেটা আছে। আর জরুরি পরিকাঠামো। ভারতীয় উদ্যোগের কথা বলতেই তালিকার শীর্ষে যে শহরের নাম জ্বলজ্বল করে সেই বেঙ্গালুরুর সাফল্যের অভিজ্ঞতাই শেয়ার করলেন শ্রীবাস্তব। বলছিলেন, পরিকাঠামো তৈরির কাজ এখনও চলছে কর্ণাটকে। শুধু কর্ণাটকে কেন, গোটা দেশকেই যুক্ত করার কাজ চলছে। সড়ক পথে যুক্ত করা এক জিনিস কিন্তু ইন্টারনেটের কেবল দিয়ে গোটা দেশকে এক প্লাটফর্মে দাঁড় করানো অন্য জিনিস। আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান বলছে কানেক্টেড দেশ গুলির তালিকায় ভারত দ্বিতীয় স্থানে আছে। আবার কানেক্টেড নয় এমন দেশের তালিকাতেও ভারত দ্বিতীয় স্থানে। ফলে সুযোগ আছে ভারতে। এগোনোর সুযোগ। সাফল্যের সম্ভাবনা। যেমন সেই সম্ভাবনা উজ্জ্বল বাংলায়। কারণ এই নয় যে বাংলা দেরি করে শুরু করেছে এবং এখনও মঞ্চ ফাঁকা। বরং এই জন্যে যে বাংলায় পরিকাঠামো আছে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা আছে। শুধু চাই রাজ্যের মানুষের মানসিকতা। একেবারেই এটা উপভোক্তার ইচ্ছার মত। সে কোন প্রোডাক্ট কেন ব্যবহার করবে তাতে তাঁর নিজস্ব যুক্তি-ক্রম থাকে। এই কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, অনলাইনে ধরুন আপনি একটা আইফোন সস্তায় পাচ্ছেন, কখনও ভেবে দেখেছেন কেন, হতেই পারে দোকান থেকে কিনলে আপনি যে ওয়ারেন্টি পলিসিতে কিনবেন অনলাইনে সেটা থাকবে না, কিন্তু তবু অনলাইনে প্রোডাক্টটা দারুণ বিক্রি হচ্ছে। কারণ সাধারণ উপভোক্তা জেনে বুঝে সেটা এভাবেই চাইছে। ফলে উপভোক্তার ইচ্ছে অনুযায়ী যেমন বাজার চলে তেমনি উদ্যোগপতিদের চয়েস বা ইচ্ছে অনুযায়ী বাণিজ্যিক সাফল্য বিকশিত হয়। বাংলা বিহার এবং পূর্বাঞ্চলে পরিকাঠামোর নিরিখে দারুণ কাজ হয়েছে। উদ্যোগপতিরা ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেন নিজেদের দুর্দান্ত আইডিয়া নিয়ে ফলে এখানেও সেই একই জিনিস সম্ভব যা অন্য শহরে হয়েছে। শুধু প্রয়োজন একটা ঠিকঠাক ইকোসিস্টেম। বেঙ্গল চেম্বারের আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপ বিজনেস ফোরাম তৈরিই হয়েছে উদ্যোগের পরিবেশ তৈরি করে দিতে। এমন পরিবেশ যেখানে উদ্যোগপতিরা পাবেন ব্যবসা তৈরি করা থেকে ব্যবসা বাড়ানোর সমস্ত রকম সহযোগিতা।